Name: উদয়ন (ছদ্মনাম )
Age: ৩৩
Country: ভারত
“এই ঊশা, গাড়িটা রেখে দে, এটা আদিত্যের খেলনা।”
“কিন্তু এইটা আমার ভালো লাগছে, অনেক, আমি গাড়ি দিয়েই খেলবো।”
“আরে বাবা! এই যে তোমার জন্য কত্তগুলা হাড়ি পাতিল কিনে দিয়েছি। ঐগুলা দিয়ে খেলো।”
“আমি গাড়ি দিয়েই খেলবো…”
এবারে, নিজেকে সংযত করে রাখতে পারেন না, ঊশা ও আদিত্যর মা , উমা রানী ইচ্ছে মতো বকাঝকা করেন ঊশাকে। ঊশা গাল ফুলিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
উমা ও দীপক দত্তের ঘরে ২ ছেলে মেয়ে। তারা আবার জমজ। আদিত্য ও ঊশা। আদিত্যকে নিয়ে তাদের কোনো সমস্যা নেই, দিব্যি নিজের মতো থাকে, নিজের ব্যাতিক্রম কিছু করে না। কিন্তু, ঊশাকে নিয়ে তাদের ব্যাপক চিন্তা। সে কেবলই ছেলেদের জিনিসে আগ্রহ। তাদের এখন বয়স ১২ বছর ছাড়িয়েছে। ঊশা ছেলেদের মতো টি শার্ট আর প্যান্ট পরে থাকে। মাঠে পাড়ার ছেলেদের নিয়ে ক্রিকেট খেলে৷ এই বয়সে মেয়েরা হাড়ি পাতিল বা পুতুল নিয়ে খেলবে তা না। এ নিয়ে পাড়ার অন্য প্রতিবেশীরা না না কথা বলে৷ ঊশার মা আরো শঙ্কিত হয়ে উঠেন৷ সামনে আর বেশি দিন নেই, ঊশা পূর্ণাঙ্গ মেয়ে হয়ে উঠবে৷ এখনো যদি পরিবর্তন না হয়৷ কখন?
ঊশা এখন বড় হয়ে গেছে। বয়স ছাড়িয়েছে ২০ এর কোটা। স্বভাব বদলায় নি কিছুই। ছোট ছোট চুল, পড়নে থাকে ছেলেদের শার্ট প্যান্ট। ঊশার মা আর কিছু বলেন না, কত বলবেন। কত জোর করানো যায়। ইদানীং হটাৎ ঊশার মাথায় নতুন ভূত চেপেছে, সে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরোপুরি ছেলে হয়ে যাবে। এটি নিয়ে পরিবারের সাথে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছে। ঊশা নানা ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করলেও পরিবারের সবাই মানতে নারাজ। নতুন লিঙ্গ বললেই তো হলো না। দেশে এজন্য কি পরিমাণ জটিলতায় পড়তে হবে সেটা ঊশা কে বুঝানো যাচ্ছে না। সব সনদপত্র থেকে শুরু করে, জাতীয় পরিচয়পত্র, সব জায়গায় জেন্ডার পরচয় পরিবর্তন করা সহজ কথা নয়। সাথে সামাজিক বাঁধা তো আছেই। সমাজ কি সহজে মেনে নিবে? যতই সবাই ওকে “টম বয়” বলে ক্ষেপাক না কেন, সরাসরি জেন্ডার চেইঞ্জ করে ফেলাটা কেউ মেনে নিবে না। এরজন্য অপারেশন তো প্রশ্নের বাইরে। এত অদরকারী কিছু করার কি দরকার৷ ঊশা ছোটবেলা থেকে বলে আসছে, ওর নিজেকে মেয়ে হিসেবে ভাবতে ভালো লাগে না। ছেলে ভাবতে ভালো লাগে। ছেলেদের কাজ করতে ভালো লাগে, কিন্তু তার কথায় পাত্তা দেয় নি কেউ। মা ভেবেছিলেন, বয়ঃসন্ধি তে এসে সব ঠিক হয়ে যাবে৷ কিন্তু সব ঠিক হলো কই? ঋতুস্রাবের সময় তো ঊশার অবস্থা আরো খারাপ হওয়ার জোগাড়। ঊশার মা ভেবে পান না, এরকম কেন হলো মেয়ে। মানিয়ে নিতে পারলো না কিছুই…
ঊশার মা কেবল চোখের জল ফেলেন আর কাঁদেন সৃষ্টিকর্তার কাছে। মেয়েটি যেন ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু হচ্ছে না।
উশা নিজের মতো মানুষ খুঁজে পেতে ফেসবুকে ট্রান্সজেন্ডারদের একটি গ্রুপে যুক্ত হন। ট্রান্সজেন্ডারদের গ্রুপেই ঊশার পরিচয় হয়েছে একটি জন্মগত শরীরের “ছেলে”র সাথে। তথাকথিত সমাজের মত অনুসারে ছেলেটা খুবই “মেয়েলী”। বাচনভঙ্গি থেকে শুরু করে কথা বলার ভঙ্গি পর্যন্ত। ছেলের নাম রাজেশ। রাজেশের সাথে কথা বলে ভালো লাগে ঊশার। রাজেশের আচরনে ও চমৎকার একটি প্রেমময়ী নারীকে খুঁজে পায়। রাজেশের পরিকল্পনাও ওর মতোই, নিজের লিঙ্গ চেইঞ্জ করে পুরোপুরি জেন্ডার চেইঞ্জ করে ফেলবে। ছেলেদের জন্য এটা বেশি কঠিন। মেয়েদের ছেলেদের সতো সাজলে ওতো ” ভিন্নরকম” লাগে না কিন্তু ছেলেদের মেয়েদের মতো সাজলে পুরোপুরি আলাদা রকম লাগে। বিষয়টি নিয়ে ভাবনায় আছে রাজেশ। অস্ত্রোপচার জিনিসটাও এত সহজ নয়। জীবনহানর ঝুঁকি তো আছে, সেই সাথে অনেক ব্যয়বহুল৷
দুই জনের মাঝে দারুন একটি অন্তরঙ্গ বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়েছে , রাজেশ যদিও আরো রোমান্টিক এবং শারিরিক ইনটেমিসি আশা করেছিলো, তবে তার অনুমান ঊশা লিঙ্গ পরিবর্তনের আগে তেমন কিছু চায় না।
সব চিন্তা ভাবনা করে, দুজনেই একই সাথে লিঙ্গ পরিবর্তন করে ফেলে নতুন জীবনের স্বীদ্ধান্ত নিলো। যদিও, খরচ হয়েছে অনেক কিন্তু শান্তির কাছে ওসব কিছু নয়। ঊশা নিজের নাম পাল্টে উদয়ান রাখলো। আর রাজেশ নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখলো রোশনি
ঊশা(উদয়ান) দেখলো, ওর জেন্ডার পরিবর্তন হওয়ার পর কোনো সমস্যা হয় নি ঠিকই। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই ছেলে বা মেয়ে কাউকেই ওমনভাবে ভালো লাগতো না তার। রোমান্টিক কোন আকর্ষণ অনুভব করতো না। ডাক্তারকে এটি বলায়, ডাক্তার মনে হয় বেশ গাবড়ে গেলো। ডাক্তার তার টেস্টোস্টেরনের ডোজ বাড়িয়ে দিলো। আরও চেষ্টা করতে লাগলো কি করে ওকে সেক্সুয়ালি একটিভ করা যায়। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছিল না কিছুই৷ ঊশা(উদয়ান) তার মতো যারা নিজেদের জেন্ডার পরিবর্তন করেছে তাদের গ্রুপে এটি নিয়ে জিজ্ঞেস করলো। তখন তারা তাঁকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করলো। কেউ কেউ বললো, যদি কোনো কিছু ফিল না করে তাহলে জেন্ডার চেইঞ্জ ই বা কেন করলো? কেনই বা নিজের মধ্যে এত পরিবর্তন করালো। সমাজের অন্যান্য মানুষের সাথে সাথে তার ওদের কথাও সহ্য করতে হচ্ছে। সে-ই তখন যে সবচেয়ে সাহস জুগিয়েছে সে হলো রাজেশ (রিদিমা)। সে-ও এখন আর পাশে নাই।
তবে উদয়ান দমে যায় নাই, এতদূর পাড় হয়ে এসে সে ভেঙ্গে পরবে না কখনই।
ফেসবুকে এসেক্সুয়ালদের একটি গ্রুপ খুঁজে পেল উদয়ান। সেখাে অনেক নতুন বন্ধু হলো, ভাগ্যক্রমে সেখানে একজন আ্যসেক্সুয়াল ট্রান্স উইম্যান নতুন বন্ধু পেল, নাম নীলাঞ্জনা। এই গ্রুপের নিকট থেকেই এসেক্সুয়াল ট্রান্স ফ্রেন্ডলি একজন ডাক্তারের খোঁজও পেয়ে গেলো। নতুন গ্রুপের সবাই বিশেষ করে নীলাঞ্জনা সাপোর্ট করতে থাকলো৷ উদয়নের মনে হলো সে নিজের মতো করে একটা সুন্দর জীবন বাঁচার নতুন সংগ্রাম শুরু করলো। সংগ্রাম হলেও এ শরীর অনেক আপন, এ জীবন বেশ শান্তির ।
জেন্ডার পরিবর্তন যে কেবল যৌন সঙ্গমের আনন্দের জন্য নয় বরং নিজের মধ্যকার বাঁধা বিপত্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ও হতে পারে, সেটার উদাহরণ হয়ে থাকলো তারা দুজন…
This case study is based on a phone call from India. It narrates the experience of a transman who became isolated from the trans community after his transition because he expressed a lack of interest in sexual intimacy or having a sexual partner. Please note that all names mentioned in this study are fictional to protect privacy.
Your content is top-notch! I appreciate the effort you put into making it so informative.
I\’m impressed by your writing style and the depth of your knowledge on this topic.
I\’m honored to hear that. I\’m always striving to provide the best information possible.
Your dedication to providing quality content is truly admirable. I\’m a fan of your work.