By Dipa Mahbuba Yasmin
কল্পনায় একটি ছবি আঁকতে দেখতাম নিজেকে। পথের দু’ধারে গাছে গাছে ছেয়ে থাকা শূন্যলতা (Love vine)। মনে হতো, বলিষ্ঠ গাছের আষ্টেপিষ্টে পেঁচিয়ে থাকা এ প্রাণনাশী পরগাছা যেন শূণ্যে ভাসছে সোনালি জড়ির পাখা মেলে। জীবন্তগাছের নির্যাস নিয়েই যাদের বেঁচে থাকা। অন্যের আশ্রয়ে ভয়ে বা অভয়ে তার জড়িয়ে রাখার, আঁকড়ে ধরার ক্ষমতা কি কাউকে মুগ্ধ করে? নাকি, শাখা প্রশাখায় প্রেমে বুঁদ করে এ আশ্রিতা এক দিন পূর্ণ গ্রাস করবে, সে ভয়ে এড়িয়ে যাবে বা তাকে উপড়ে ফেলবে সবাই?
মায়াজালের তলায় বসে বসে মায়ার জালে আটকে পরে থাকার আত্মজীবনিটা এঁকে যাচ্ছি আমি! আঁকতে আঁকেতে মনে হচ্ছিল আত্মজীবনীর চিত্রকর্মে একটা ছদ্মনাম দেয়া যাক নিজের- Love vine lady।
যে জীবনে যখন যাকে পেয়েছে, তাকেই খুব জোরেসোরে পেঁচিয়ে ধরে মেন্টালি, ইমোশনালি বেড়ে উঠতে চেয়েছে। কিন্তু একটা নির্জীব প্রণয়ে, নিষ্কাম প্রাণকে শুধুই নিঃস্বার্থভাবে কেনো কেউ সঙ্গী করে নিয়ে পরিস্ফুটিত করবে? শুধু মেন্টালি ও ইমোশনালি সঙ্গ দেয়া বা নেয়ার সম্পর্কের পূর্ণতা কেউ তো চাইতেই পারে … সেটা তো নিরোপরাধ চাওয়া।
আকঁতে আকঁতে মনে মস্তিস্কে চলতো কত শত আলাপ!
নিয়মের রোজকার হিসেবি খাতার পাতায় যোগ বিয়োগ কিংবা পাটিগনিত মেলাতে বসে সুত্রগুলো এলোমেলো হয়ে যেতো, তাই খাতাটা তুলে রেখেছিলাম বহুকাল। একটা খুব স্বাভাবিক প্রাণচ্ছল শৈশব, এরপর একটা দ্বিধাভরা কৈশোর থেকে পড়ন্ত বিকেলের মতো যৌবনের দু হাত ধরে রাতের গভীরতায় ফেলে আসা একটা অমিমাংসিত সময়ের হিসেব কষতে শুরু করা …
আজও কি আমি অসংশয়িত? আমি আর আমার এক সমুদ্র দ্বিধা ভরা জীবন আজও কি জোর গলায় বলতে পারি, নিজের অভিমুখীতা? যখন বেমানান রুপে শরীরে পরিবর্তন ডঙ্কা বাজালো। সমবয়সীরা যখন অশান্ত-অকূল-আকূল। তখনও আমি সমুদ্রের ঢেউ নই, উঠোনে জমে থাকা পানির মতোন, স্থির, শান্ত!
কৈশোর থেকে যৌবন তাই দ্বিধায় ডুবেছি বারবার! বিপরীত, সম্মুখী না উভমুখী- ভালোলাগাটা বিস্তর লেপ্টে ছিল সবখানে। কিন্তু তা কেবলললললল ভালোলাগা!
যে ভালোলাগার কোন ঠোঁট ছিল না, বুক ছিল না, ঘাড় থেকে নেমে যাওয়া পিঠ, কোমর বা জননের কোন অঙ্গও ছিল না। তবে শুধু আত্মা ছিল! আবেগের দরজা আপনাতেই উন্মুক্ত হয়ে হু হু করে ঢুকতে লাগতো অফুরান প্রণয়ের হাওয়া। হাওয়া হয়েই তারা এখনো আমার সারা গায়ে জরিয়ে আছে! বহুবার বহু বিষন্নতাকে কাঁধে তুলে নিয়ে তারা হারিয়ে গেছে ছায়ার সুরে!
সংশয় আমার আজীবন, এক আকাশ বা এক সমুদ্র কিংবা এক পৃথিবী ।
কিসের অভাব ঐ দেহে? উছল যৌবন এ নারীর সারা অঙ্গেও ছেয়ে ছিল।
কিসের অভাব ছিল ঐ মনে? রক্তের নৃত্যে আত্মার প্রত্যেক তন্ত্রীতে অলৌকিক ভালোবাসা তারও জেগেছিল,
কিন্তু তা কেন শিহরণহীন এক ভালোবাসা?
যেখানে যৌবনের উত্তেজনা নেই, শরীরের উত্তাল স্রোতেরা নেই, আমাকে ইঙ্গিতে ইঙ্গিতে কে যেন ডেকেছে, শুধু ডেকেছে, কিনতু তার সাহচর্য্যে আমার অনুভূতি নিশ্চল কেন? তবুও হঠাৎ হঠাৎ বুকের মাঝে অহেতুক আলোরণ জেগেছিল কেন? কেন ধরার বুকে মেতে উঠেছিল সে কি উল্লাসকর নৃত্যের শান্ত প্লাবন?
জীবনটা এর পরেও, এর মাঝেও খারাপ ছিল না! কিন্তু হঠাৎ চারিদিক থেকে সকলে সর্বোক্ষণে, কেউ বিয়ের পদ্য, কেউ বিয়ের গদ্য, কেউ বা বিয়ের কান ফাটানো ঢাক বাদ্য নিয়ে ঘিরে ধরতে শুরু করলো!
কাউমাউ – প্যাঁ-পোঁ- ভটভট- ফফটফট নানা রকম ভৌতিক শব্দের মতো!
ভয়, হাশফাঁস কিংবা নিশ্বাস নিতে না পারার মতো অনুভুতি!
এখন যৌবন আকাশে নেমে এসেছে বিকেল কিংবা সন্ধ্যে। ঘন অন্ধাকার হয়ে আসছে যৌবনের প্রতিটি মুহূর্ত্, তাই পড়ন্ত বিকেলে যেন এক শান্ত গোধূলীর প্রণয়,স্পন্দন হীন অনুভবে ভরা ! স্পর্শকে কামনা করিনি আমার বাহিরে, শুধু ভিতর জুড়েছে স্পর্শে, তাইতো আলাদা করে চাওয়ায় পাওয়ায় মেপে নির্মম হৃদয়-হীনতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে সবাই।
ধীরে ধীরে আমিও হয়ে গেলাম Love vine monster ।
কারো কাছে আদিখ্যেতায় ভরা লাজুক নারী।
অবশেষে সকলের কাছে গুটিয়ে থাকা নারী।
যার ভালোবাসায় শিহরণ থাকে না, তাই সে থাকে লুকিয়ে। হয়ে যায় একা, আরো একা। যে নিসঃঙ্গতায় আত্মার মৃত্যু হয় প্রতিদিন,প্রতিরাতে। নিজের অস্তিত্ব সে ভুলে যায়, তাই তার দেখা তোমরা পাও না!
কারণ সে বুঝে গিয়েছিল, তার সংগ্রামটা একান্তই একার।
সে কারোরই না, ‘ওদের’ না, ‘তাদের’ না, কারোর না!
কেননা সে তো গরীবের মধ্যে আরো গরীব, ছোটলোকের মধ্যে আরো ছোটলোক!
Your post is a true masterpiece. I\’ll be referencing it in my own work.
Your insights in this post are spot on. I can\’t wait to see what you write next!
I\’m glad you enjoyed it! Your kind words inspire me to keep creating informative content.